আজ রবিবার, ২রা অগ্রহায়ণ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ, ১৭ই নভেম্বর, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ

তাদের দূরত্ব কমছে না

স্টাফ রিপোর্টার :

তেলে জলে মেশে না; বাংলার এই প্রচলিত প্রবাদের সাথেই যেন মিলে গেছে নারায়ণগঞ্জ জেলা ও মহানগর আওয়ামী লীগের শীর্ষ ৪ নেতার মধ্যকার সম্পর্ক। নারায়ণগঞ্জের আওয়ামী লীগের রাজনীতিতে বিদ্যমান উত্তর-দক্ষিণ মেরুর বিভাজনের কবলে পড়েছেন তারাও। তাই তাদের মধ্যকার সম্পর্কটা সেই তেল আর জলের মতই দেখছেন দলীয় কর্মীরা।

জানা গেছে, জেলা ও মহানগর আওয়ামী লীগের সম্মেলনের বাতাস যখন বইছিল, তখন এই চার নেতা নিজ নিজ কমিটির স্বার্থে একত্রিত হয়েছিলেন। বেশ রসালো সম্পর্কের জানান দিয়েছিলেন প্রত্যেকেই। তবে, সেই ‘রস’ আর বেশী দিন টেকেনি। মেরুগত বিভেদ তাদের মাঝে অদৃশ্য দেয়াল তৈরী করে রেখেছে। ফলে জেলা ও মহানগর আওয়ামী লীগের কমিটি গঠনে এর বিরুপ প্রভাব পড়েছে।

জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি আবদুল হাইয়ের সাথে মেয়র আইভীর সু-সম্পর্ক দেখা যায়। আর সাধারণ সম্পাদক আবু হাসনাত মোহাম্মদ শহীদ বাদল এমপি শামীম ওসমানের অনুসারী এবং তার ঘনিষ্ঠ বন্ধুও বটে। একই ভাবে মহানগর আওয়ামী লীগের সভাপতি আনোয়ার হোসেনকে বর্তমানে মেয়র আইভীর পাশে দেখা যায়। আর সাধারণ সম্পাদক অ্যাডভোকেট খোকন সাহা এমপি শামীম ওসমানের ঘনিষ্ঠ বন্ধু তথা ওসমান পরিবারের ঘোর অনুসারী।

তারা একই দলের শীর্ষ নেতা হলেও মেরুগত দূরত্ব তাদের পৃথক করে রেখেছে। যদিও তারা তারাই সম্মেলনের আগে এক টেবিলে বসেছিলেন। দলের নেতাকর্মীদের আশার বানি শুনিয়েছেন। বিভাজনের কারণে যেখানে বিগত ৮-১০ বছরেও একটি ওয়ার্ড কমিটিও গঠন করতে পারেনি, সেখানে তৎকালিন সময়ে মহানগর আওয়ামী লীগের সভাপতি-সাধারণ সম্পাদক এক সুরে সিদ্ধান্ত নিয়েছিলেন, ১ মাসের মধ্যে ২৭টি ওয়ার্ড কমিটি গঠন করবেন!

তবে, ওয়ার্ড কমিটি গঠনকালেই তাদের সম্পর্কের অবনতি ঘটেছিল। ১২নং ওয়ার্ডে নিয়াজুলকে সভাপতি করায় চটেছিলেন আনোয়ার হোসেন। নিয়াজুলকে সন্ত্রাসী বলেও আখ্যায়িত করেছিলেন তিনি। এতে পাল্টা জবাব দিয়েছিলেন, এমপি শামীম ওসমান ও খোকন সাহা। আবার আসন্ন জাতীয় নির্বাচনে আনোয়ার হোসেন দলীয় মনোনয়ন প্রত্যাশা করায় তা নিয়েও সমালোচনা করেছিলেন খোকন সাহা।

তৃণমূলের কর্মীরা বলছেন, সম্মেলনের আবহ তৈরী হওয়ায় পর দীর্ঘদিন যারা এক টেবিলে বসেছিলেন, ওয়ার্ড কমিটির সম্মেলনের মাঝেই সেই তারাই আবার বিরোধীতায় লিপ্ত হয়েছেন। এ যেন তেল ও জলের মত। যতই তাদের একত্রে রাখা হয়, কোন কালেই তারা মিলে না।

অন্যদিকে, জেলা আওয়ামী লীগের সম্মেলনের সময়ে আবদুল হাই ও আবু হাসনাত মোহাম্মদ শহীদ বাদলকে একত্রে দেখা গিয়েছিল। তবে, সম্মেলনের পরপরই তারা নিজেদের পৃথক করে রেখেছেন। যার প্রভাব পড়েছে জেলা আওয়ামী লীগের পূর্নাঙ্গ কমিটি গঠনে।